ফাইল ছবি
ইসলামের মূল স্তম্ভ পাঁচটি। এর অন্যতম হজ। হজের শাব্দিক অর্থ, ইচ্ছে করা। পরিভাষায় নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট দিনে, কতিপয় নির্দিষ্ট আমলের মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাকে হজ বলে। হজ হলো, শারীরিক ও আর্থিক উভয়ের সমন্বিত একটি ইবাদত। হজ করার সামর্থ্য আছে, এমন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ওপর হজ করা ফরজ। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর আল্লাহর জন্য বাইতুল্লাহর হজ করা আবশ্যক।’ (সুরা আলে ইমরান : ৯৭)। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি মারাত্মক অসুবিধা, জালেম বাদশা কিংবা হজ আদায়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী কোনো ব্যাধি দ্বারা আবরুদ্ধ না হয়, আর সে হজ আদায় না করেই মারা যায়, তাহলে সে ইহুদি বা খ্রিষ্টান হয়ে মরুক (তাতে কিছু যায় আসে না)।’ (সুনানে দারেমি : ১৮২৬)।
সামর্থ্যবানদের ওপর হজ আবশ্যক
রাসুল (সা.) বলেন, যার কাছে হজে গমন করার খরচ এবং এমন বাহনের ব্যবস্থা রয়েছে, যা তাকে বাইতুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। অর্থাৎ তার সামর্থ্য ও সক্ষমতা রয়েছে এবং বাইতুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার বাহনের ব্যবস্থাও রয়েছে; এ সত্ত্বেও সে যদি হজ না করে, তাহলে তার মাঝে কোনো পার্থক্য নেই যে, সে ইহুদি হয়ে মরল নাকি খ্রিষ্টান হয়ে। কেননা, আল্লাহতায়ালা বলেন, আল্লাহর জন্য বাইতুল্লাহর হজ করা সেসব নর-নারীর ওপর আবশ্যক, যার জন্য বাইতুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার সামর্থ্য ও সক্ষমতা রয়েছে; আর যে তা অস্বীকার করল, সে জেনে রাখুক, আল্লাহতায়ালা সারা দুনিয়া থেকে অমুখাপেক্ষী।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ : ২৫২১)।
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ না করা ঈমানহারা হওয়ার লক্ষণ
কোনো ব্যক্তির ওপর হজ ফরজ হওয়া সত্ত্বেও যদি দুনিয়াবি ব্যস্ততার কারণে হজ করতে না যায়, সে মারাত্মক গোনাহগার হবে। এমন ব্যক্তির পরিণাম ভালো হবে না। তার ঈমানহারা হয়ে মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অপরদিকে যারা আল্লাহর এ বিধানকে পালন করবে, সামর্থ্যবান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হজ আদায় করবে, আল্লাহতায়ালা তাদের জন্য বহু ফজিলত রেখেছেন। রাসুল বলেন, ‘যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশে হজ আদায় করবে এবং হজ পালন করা অবস্থায় অশ্লীল কথোপকথন না করবে এবং কোনো প্রকার পাপাচারে লিপ্ত না হয়, সে এরূপ পাপমুক্ত হয়ে প্রত্যাবর্তন করে, যেরূপ তার মা তাকে নিষ্পাপ অবস্থায় প্রসব করেছিল।’ (বোখারি : ১৫২১)।
সর্বোত্তম আমল হজ করা
একবার রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘কোন আমলটি সর্বোত্তম?’ তিনি বললেন, ‘শ্রেষ্ঠ আমল হলো, আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.)-এর ওপর ঈমান আনা।’ বলা হলো, ‘তারপর কি?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।’ জিজ্ঞেস করা হলো, ‘তারপর কি?’ তিনি বললেন, ‘কবুল হজ।’ (বোখারি : ১৫১৯)।
কবুল হজের পুরস্কার জান্নাত
রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা হজ এবং ওমরা ধারাবাহিকভাবে পালন করতে থাকো। কেননা, এ দুটি দারিদ্র্য ও গোনাহসমূহকে এমনভাবে দূর করে দেয়, যেমন কর্মকারের হাপর লোহা ও সোনা-রুপা থেকে ময়লাকে দূর করে দেয়। আর কবুল হজের বিনিময় তো শুধু জান্নাত।’ (তিরমিজি : ৮১০)।
(এই bunonnews.tv ওয়েভ-সাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বে-আইনি)
© 2025, বুনন নিউজ টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT