• ঢাকা
  • |
  • শনিবার, ৩রা মে ২০২৫
  • - ৩৩° সে:
Language

দলবদ্ধ ধর্ষণ ছাড়াও একাধিক নারীর শ্লীলতাহানি করে ডাকাত দল

বুনন নিউজ

রবিবার, ৭ই আগস্ট ২০২২

র‍্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার ১০ ব্যক্তিছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জগামী ঈগল এক্সপ্রেসের বাসে ডাকাতি ও দলবদ্ধ ধর্ষণ ছাড়াও একাধিক নারী যাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন ডাকাত দলের সদস্যরা।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানায় র‍্যাব। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গতকাল রোববার ঢাকা, সাভার, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ, সাভার ও টাঙ্গাইলে অভিযান চালিয়ে ডাকাত চক্রটির ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী রয়েছেন।

র‍্যাবের বিবরণ অনুযায়ী, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—মো. রতন হোসেন (২১), মো. আলাউদ্দিন (২৪), সোহাগ মন্ডল (২০), খন্দকার মো. হাসমত আলী (২১), বাবু হোসেন (২১), মো. জীবন (২১), আব্দুল মান্নান (২২), নাঈম সরকার (১৯), রাসেল তালুকদার (১৮) ও আসলাম তালুকদার (১৮)। তাঁদের মধ্যে রতন মূল পরিকল্পনাকারী। তাঁর বিরুদ্ধে ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে।

র‍্যাব বলছে, বাসটিতে মোট ২৪ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচ থেকে ছয়জন ছিলেন নারী যাত্রী। তাঁদের মধ্যে একজনকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেন ডাকাত দলের সদস্যরা। এ ছাড়া তাঁরা একাধিক নারী যাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা র‍্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ কথা স্বীকার করেছেন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, চক্রটির নেতা রতন। তিনি ছদ্মবেশে ২০১৮ সাল থেকে যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে আসছিলেন। তাঁর অধীনে ডাকাত চক্রটিতে ১৩ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছেন। ডাকাতির ঘটনায় আগে তিনি দুই দুই দফায় কারাভোগ করেছেন। ৯ মাস আগে তিনি জামিনে বের হয়ে আসেন। আবার ডাকাতি শুরু করেন। এই সময় তাঁর পরিকল্পনা-নেতৃত্বে ১০ টির মতো ডাকাতের ঘটনা ঘটে। সবশেষ গত মঙ্গলবার রাতে ঈগল এক্সপ্রেসের চলন্ত বাসে তাঁর পরিকল্পনায় ডাকাতি হয়। বাসে ডাকাতিকালে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায়, বাসে ডাকাতির জন্য ৫ হাজার টাকার একটি প্রাথমিক তহবিল গঠন করা হয়। রতন এই টাকা সরবরাহ করেন। ২ আগস্ট টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা মোড় থেকে ছুরি, খুরসহ দেশি অস্ত্র কেনেন তিনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তাঁর অন্যতম সহযোগী রাজু ডাকাতির জন্য অন্যদের জোগাড় করেন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, সব ধরনের প্রস্তুতি শেষে ডাকাত দলের সদস্যরা বাসে ডাকাতের উদ্দেশ্যে সিরাজগঞ্জ মোড়ে অবস্থান নেন। যাত্রীবেশে রতন, রাজা, মান্নান ও নূর নবী বাসটিতে ওঠেন। পরবর্তীতে আরও দুই দফায় এই চক্রের বাকি সদস্যরা যাত্রী সেজে বাসে ওঠেন। তাঁরা বাসের পেছনের বিভিন্ন ফাঁকা সিটে অবস্থান নেন। বাসটি বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু অতিক্রম করলে রতনসহ অন্যরা চালক ও তাঁর সহকারীকে বেঁধে ফেলেন। তাঁরা বাসের নিয়ন্ত্রণ নেন। পরে তাঁরা দেশীয় অস্ত্রের মুখে বাসের যাত্রীদের হাত-পা-চোখ বেঁধে ফেলেন।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শুরুর দিকে রতন বাসটি চালাতে থাকেন। এলেঙ্গা এলাকায় আসার পর রতন চালকের সিট থেকে উঠে যান। তাঁর স্থলে চালকের সিটে বসে বাস চালাতে থাকেন রাজু। তাঁরা একে একে সব যাত্রীর কাছ থেকে নগদ অর্থ, মোবাইল, অলংকার ছিনিয়ে নেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাসে থাকা এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। অন্য একাধিক নারী যাত্রীতে তাঁরা শ্লীলতাহানি করেন।

বাসে ডাকাতি ও দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন—রাজা মিয়া, আবদুল আওয়াল ও নুর নবী।