নিজেদের মতো করে ক্যাম্পাস মাতিয়ে রাখেন শিক্ষার্থীরাছবি: আনিস মাহমুদ
জায়গাটার নাম আলুরতল। টিলাঘেরা সবুজ একটা জায়গা। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) ঘুরে দেখতে দেখতে এক দুপুরে আমরা হাজির হই আলুরতলে। এখানে-সেখানে বসে আড্ডায় মশগুল শিক্ষার্থীরা। কোনো কোনো শিক্ষার্থীর দল শিক্ষককে মাঝখানে রেখে জটলা বেঁধে দাঁড়িয়ে আছেন। কাছে গিয়ে বোঝা যায়, চলছে ব্যবহারিক ক্লাস।
বৈশাখী চত্বরে মাত্স্যস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্রী নাতাশা তাসনিয়ার সঙ্গে দেখা। সহপাঠীদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন তিনি। জানালেন, বৈশাখী চত্বর, টিএসসি কিংবা শহীদ মিনার এলাকাতেই ছাত্রছাত্রীদের আড্ডা জমে বেশি। মত্স্যজীববিদ্যা ও কৌলিতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্রী আইরিন জেরিনকেও বৈশাখী চত্বরেই পাওয়া গেল। এ চত্বরটিকে ‘ফুচকা চত্বর’ নামেও ডাকা হয়। জেরিন বলেন, ‘আমাদের গল্পে আসলে ঘুরেফিরে পড়ালেখা, অ্যাসাইনমেন্ট—এসবই চলে আসে।’ লেখাপড়ার পাশাপাশি গবেষণা ও সহশিক্ষা কার্যক্রমের জন্যও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুনাম আছে।
পরিবেশ ও প্রাণীর জন্য ভালোবাসা
বন্য প্রাণী পিটিয়ে মারা হচ্ছে—এমন সংবাদ পেলেই ছুটে যান প্রাধিকারের সদস্যরা। সেসব প্রাণী উদ্ধার করে, চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে পরে তাঁরা নিরাপদ পরিবেশে অবমুক্ত করেন। সংগঠনের সদস্যরা গত ১০ বছরে গন্ধগোকুল, তক্ষক, বনবিড়াল, ভুবনচিল, প্যাঁচা, শকুন, ইগল, অজগর, পদ্মগোখরা, ঘরগিন্নি, দাঁড়াশসহ অন্তত ২০০ প্রাণী উদ্ধার করেছেন।
প্রাণী অধিকার ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে প্রাধিকারের নাম এখন সুপরিচিত। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১২ সালের ৫ জুন, বিশ্ব পরিবেশ দিবসে। এর পর থেকেই সংগঠনটি পরিবেশ, বন্য প্রাণীসহ সব ধরনের প্রাণীর অধিকার রক্ষায় কাজ করে চলেছে।
সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা জানান, গত বছর তাঁরা গোখরা সাপের ২৭টি ডিম উদ্ধার করে কৃত্রিম পদ্ধতিতে বাচ্চা ফুটিয়েছেন। পরে সাপগুলো লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়। এর বাইরে সব সময়ই তাঁরা কুকুর, বিড়ালসহ রাস্তায় পড়ে থাকা আহত প্রাণীদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দেন। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয় নিয়মিত। প্রাণী অধিকার রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি ও সেমিনার করেন তাঁরা।
প্রাধিকারের সাধারণ সম্পাদক আরিজ আহম্মেদ জানান, গত বন্যায় তাঁরা বন্যাকবলিত ৬০০ গবাদিপশুকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও খাবার দিয়েছেন। করোনাকালে অভুক্ত প্রাণীদের মধ্যে খাবার বিতরণ করেছেন। এ ছাড়া নিয়মিত তাঁরা পথের কুকুর, বিড়াল ও বানরদের খাবার বিতরণ করেন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে তাঁরা ‘পাখির জন্য ভালোবাসা’ কর্মসূচির মাধ্যমে গাছে গাছে পাখির আবাসের জন্য হাঁড়ি বেঁধে দেন।
(এই bunonnews.tv ওয়েভ-সাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বে-আইনি)
© 2025, বুনন নিউজ টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT