• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার, ২রা মে ২০২৫
  • - ৩৩° সে:
Language

ব্যবসা-বাণিজ্য

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্দেশনা অনিয়ম থাকলে পরিচালক হওয়া যাবে না

বুনন নিউজ

মঙ্গলবার, ৩০শে আগস্ট ২০২২

বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণ করে দিয়ে বলেছে, অনুমোদন ছাড়া কেউ কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারবেন না।

সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কাউকে অব্যাহতি, বরখাস্ত বা অপসারণ করা যাবে না এবং আগে প্রতিষ্ঠানের বেতনভুক্ত ছিলেন, এমন কেউ পরিচালক হতে পারবেন না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ গতকাল সোমবার এসব নিয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এর আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে কেউ পরিচালক হতে পারতেন, আবার যখন তখন বাদও পড়তেন। এভাবে দেশের কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক অনিয়ম হয়। ফলে ওই সব প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকেরা এখন জমা টাকা ফেরত পারচ্ছেন না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, তাদের নতুন নীতিমালা তিনটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। কারণ, ওই তিন প্রতিষ্ঠানে হাইকোর্ট কর্তৃক পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন হয়েছে। প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো—ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (পিএলএফএসএল) এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসি)।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিচালক নির্বাচন বা মনোনয়নের পর নিযুক্তি বা পুনঃ নিযুক্তির আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। এভাবে নিয়োগ পাওয়া পরিচালককে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ছাড়া অব্যাহতি, বরখাস্ত বা অপসারণ করা যাবে না।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের যোগ্যতাও ঠিক করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেউ পরিচালক হতে চাইলে তাঁকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের বিধান অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ন্যূনতম শেয়ার ধারণ করতে হবে। কমপক্ষে ১০ বছর ব্যবস্থাপনা বা ব্যবসায়িক বা পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তিনি বা তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি নয়, এটাও নিশ্চিত করতে হবে।

কারা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারবেন না, তা–ও নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বলেছে, মনোনীত ব্যক্তি বা মনোনয়ন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হওয়া কিংবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে দেওয়ানি/ফৌজদারি আদালতের রায়ে কোনো বিরূপ পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্য থাকলে তা অযোগ্যতা হিসেবে চিহ্নিত হবে।

মনোনীত ব্যক্তি বা মনোনয়ন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকারের কোনো সংস্থা কর্তৃক সম্পাদিত তদন্ত/পরিদর্শন প্রতিবেদনে জাল-জালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ বা অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে কোনো পর্যবেক্ষণ থাকা যাবে না।

এ ছাড়া মনোনীত ব্যক্তি বা মনোনয়ন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যদি আর্থিক খাতসংশ্লিষ্ট কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধিমালা, প্রবিধান বা নিয়মাচার লঙ্ঘনজনিত দণ্ডে দণ্ডিত হন, তিনিও পরিচালক হতে পারবেন না।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বহিঃহিসাব নিরীক্ষক, আইন উপদেষ্টা, উপদেষ্টা, পরামর্শক, বেতনভুক কর্মচারী বা অন্য কোনো পদের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন কিংবা গত পাঁচ বছরের মধ্যে নিয়োজিত ছিলেন, এমন কোনো ব্যক্তিও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারবেন না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সুশৃঙ্খলভাবে চলে, সে জন্য এই নীতিমালা দেওয়া হয়েছে। ভালো পরিচালক পেলে প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো থাকবে। যেসব প্রতিষ্ঠান খারাপ হয়েছে, সেখানে পরিচালকেরা এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।