• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার, ২রা মে ২০২৫
  • - ৩৩° সে:
Language

ব্যবসা-বাণিজ্য

লোডশেডিংয়ে নাকাল দেশের হোসিয়ারি শিল্পকারখানা

বুনন নিউজ

সোমবার, ৮ই আগস্ট ২০২২

গেঞ্জি বানানোর সুতি কাপড়ের থানগুলো ডাইং কারখানায় পরিষ্কার ও রং করার পর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হোসিয়ারি কারখানায়ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জ জেলা শহরের নয়ামাটি ৬ নম্বর এস এস রোড এলাকার বৃষ্টি টেক্সটাইলের মেশিন অপারেটর হারুন মিয়া এক মাস আগেও সপ্তাহে ১ হাজার ৮০০ পিস গেঞ্জি (টি-শার্ট) সেলাই করতেন। কিন্তু বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে তা কমে ৯০০ পিসে, অর্থাৎ অর্ধেকে নেমে এসেছে। তাতে তাঁর মজুরিও কমে অর্ধেক হয়ে গেছে। আগে যেখানে সপ্তাহে সাত হাজার টাকা মজুরি পেতেন, সেখানে এখন পান সাড়ে তিন হাজার টাকা। কারণ, হারুন মিয়া বেতন পান পিস হিসেবে। আয় কমে যাওয়ায় পাঁচজনের সংসার চালাতে এখন ভীষণ হিমশিম খাচ্ছেন তিনি।

একই কারখানার লাইনম্যান মোহাম্মদ বাবুল জানান, লোডশেডিংয়ের কারণে তাঁরা এখন ক্ষমতা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করতে পারছেন না। ফলে আয় কমে গেছে। সে জন্য এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রী মিলিয়ে চারজনের সংসার চালাতে বেশ কষ্ট হচ্ছে তাঁর।

ওই কারখানায় সুইং, ওভারলক, লকসহ মেশিন আছে ২০টি। সে অনুযায়ী ঈদুল আজহার আগে মেশিন অপারেটরসহ কারখানাটিতে কাজ করতেন ২০ জন শ্রমিক। বর্তমানে কাজ করছেন মেশিন অপারেটরসহ ১০ জন। অন্যান্য কারখানাতেও এ ধরনের অবস্থা চলছে।

হোসিয়ারি খাতের উদ্যোক্তা–ব্যবসায়ীরা জানান, লোডশেডিং, কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা কারণে উৎপাদন কমে গেছে। এতে তাঁরা আর্থিক সংকটে রয়েছেন। ফলে ব্যাংকের ঋণ ও কিস্তির টাকা পরিশোধে বিপাকে পড়েছেন। যখন-তখন লোডশেডিং হওয়ায় শ্রমিকেরা কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।


হোসিয়ারি শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের মাত্র ৩ শতাংশ রপ্তানি হয়। আর ৯৭ শতাংশ উৎপাদিত পণ্যই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। আগে একটি সোয়েটার উৎপাদনে খরচ পড়ত ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। এখন পড়ছে ৩০০ টাকা। দাম এত বেড়ে গেলে দেশের মানুষ পণ্য কিনতে চাইবেন না।

নাজমুল আলম, সভাপতি,বাংলাদেশ হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশন


অপারেটর হারুন মিয়া বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে লোডশেডিং হলে অন্য কাজ গুছিয়ে রাখার সুযোগ পাওয়া যেত। রাতে ওভারটাইম করার সুযোগ থাকলেও রাত আটটায় সব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন কাজের সুযোগ নেই। ফলে আয়ে টান পড়েছে।

জানতে চাইলে বৃষ্টি টেক্সটাইলের মালিক ও বাংলাদেশ হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক আবদুল হাই প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিন দিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। এতে উৎপাদন অর্ধেকে নেমেছে। আগে সপ্তাহে ২০০ ডজন মাল উৎপাদন হলেও সেটি কমে ১০০ ডজনে নেমেছে। এতে উৎপাদনভিত্তিক মজুরির শ্রমিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আবার চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন না হলেও বেতনভুক্ত শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে মালিকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।